Header Ads

LightBlog

ওজন কমানোর সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতিটাই প্রচলিত ভুল

ওজন কমাতে একটি সাধারণ নিময় বহুকাল ধরে প্রচলিত হয়ে আসছে। তা হলো, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা থেকে ৩৫০০ ক্যালোরি ঝরাতে হবে। কিন্তু এ নিয়ম বেশিরভাগের জন্যে প্রযোজ্য নয় বলেই জানান বিশেষজ্ঞরা। এটা একটা ভুল ধারণা যা বহু সময় ধরে প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেছে বলে ইনডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডায়াবেটিস অ্যান্ড ডায়জেস্টিভ অ্যান্ড কিডনি ডিজিসেস-এর গবেষক কেভিন হল জানান, ওজন কমাতে একমাত্র খাদ্য তালিকায় কাটছাঁটের মাধ্যমে কোনো সুবিধাই মেলে না।
তিনি জানান, ১৯৫০ সালে এক বিশেষজ্ঞ তার গবেষণায় দেখিয়েছেন, ৩৫০০ ক্যালোরি খরচে ফ্যাট দ্বারা টিস্যু গড়ে ওঠে। তত্ত্বীয়ভাবে তিনি হিসাব করে দেখিয়েছেন, একজন মানুষের এক পাউন্ড ঝরাতে কত ক্যালোরি খোয়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে ওই বিশেষজ্ঞ কিছু অবাস্তবিক হিসাব কষেছেন। তিনি হিসাব করেছেন, ওজন কমাতে কেবলমাত্র ফ্যাট ঝরাতে হবে। এই পদ্ধতিতে খাবার থেকে ক্যালোরি কমানোর কারণে দেহের প্রয়োজনীয় ক্যালোরি কমে যেতে থাকে। এতে ওজন কমে ঠিকই। কিন্তু দেহ ভেঙে পড়ে।
তাই খাদ্য গ্রহণ কমিয়ে ওজন খোয়ানোর বাস্তবতা ভিন্ন। মানুষ যা ভাবে তা নয়।
ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডোর অ্যানচাজ হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টারের জন পিটারস জানান, সময়ের সঙ্গে দেহ যত ওজন হারাবে, এর বিপাকক্রিয়া ততই বাধাগ্রস্ত হতে থাকবে। তাই ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় প্রথম থেকেই খাবার গ্রহণের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেওয়া যাবে না। প্রতিদিনের তালিকা থেকে ১০০ ক্যালোরি কমিয়ে দিন। ওজন কমার সঙ্গে ধীরে ধীরে ১০০ ক্যালোরি করে খাবার গ্রহণ কমিয়ে দিতে হবে।
ওজনের সঙ্গে নানা চ্যালেঞ্জিং কাজ করে যায় দেহ। ওজন পরিবর্তনের সঙ্গে বড় পরিবর্তনটা আসে বিপাকক্রিয়ায়। এ ছাড়া নিউরোলজিক্যাল ও হরমোনাল পরিবর্তন আসে। তাই দেহের জন্যে ওজন কমানোর প্রক্রিয়া বড় ধরনের যুদ্ধ। তাই কেবলমাত্র খাবারে নিয়ন্ত্রণ এনে ওজন কমানোর বিষয়টি মোটেও সহজ প্রক্রিয়া নয়।
সব মিলিয়ে ওজন কমানো বেশ কঠিন কাজ। তাই অধিকাংশ মানুষই এতে সফল হন না। টানা এক বছর নিয়মমতো চলেও কোনো ফল মেলে না। তাই খাবার থেকে ৩৫০০ ক্যালোরি খোয়ালে ওজন কমার বিষয়টি একটা বিশ্বাসে পরিণত হয়েছে। এর ওপর ভর করে অসংখ্য মানুষ খাবার নিয়ন্ত্রণ করেন। কিন্তু কোনভাবেই ফল মেলে না।
তাই খাবারের সঙ্গে ব্যায়ম ছাড়াও জীবনযাপনের নানা পরিবর্তনের মাধ্যমে ফল আসতে পারে। মাঝে মধ্যে জনপ্রিয় কোনো বিষয় বিজ্ঞানকেও ছাপিয়ে যায়। আর এমন ভুল তথ্য যদি কোনো পুষ্টিবিজ্ঞানীর বইয়ে লেখা থাকে, তবে তা বিশ্বাস না করে পারা যায় না।     

No comments